যেই বিষয় টা নিয়ে আলোচনা করবো সেটা কম্পিউটার অথবা ফোন এর সবচেয়ে বেসিক একটা ধারণা মাত্র। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা বেসিক জানেন না তাই অনেক কনফিউশন এ পড়তে হয়। কম্পিউটার এর প্রত্যক ফাইলের নামের শেষে একটি ডট (.) এর পর কিছু লেখা থাকে যাকে বলে এক্সটেনশন। কোন এক্সটেনশন কিসের কাজে ব্যাবহৃত হয় আজ তা ই তুলে ধরবো আপনাদের সামনে। তবে হ্যাঁ,যারা একদম ভালো মাপের কম্পিউটার পারদর্শী তারা এড়িয়ে যেতে পারেন ব্যাপার টা।
ফাইল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কি – এটা এক ধরনের সিস্টেম যা দ্বারা কম্পিউটার একটা ফাইল এর এক্সটেনশন পড়ে ওই ফাইল কে কিভাবে চালনা করতে হবে তা নির্ধারণ করে ফেলে। ধরা যাক আপনি আপনার কম্পিউটার এ গান প্লে করতে চাইলেন,ফাইল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আপনার গান টির এক্সটেনশন অর্থাৎ .Mp3 অথবা .m4a দেখেই বুঝে যাবে এটি একটি গান এবং সে অনুযায়ী গানটিকে চালাতে সক্ষম কোন মিউজিক প্লেয়ার ব্যাবহার করবে। মজার ব্যাপার হলো একেক এক্সটেনশন এর একেক বৈশিষ্ট্য থাকে। আজ সেই বৈশিষ্ট্য নিয়েই কথা বলবো।
বি.দ্র. – এই পোস্ট টি পর্ব এক ও পর্ব দুই আকারে দুই ভাগে দেয়া হবে। প্রথম পর্বে ভিডিও ও গানের ফাইল ফরম্যাট এবং দ্বিতীয় পর্বে ইমেজ (আমার পছন্দের) এবং কম্প্রেসড ফাইল সিস্টেম নিয়ে বলবো। আর কোন ফরম্যাট এর এব্রিভিয়েশন কি বা কে আবিষ্কার করেছেন তা ইন্টারনেট থেকে খুঁজে নেবেন আগ্রহ থাকলে। টপিক টা বোরিং বানাতে চাচ্ছিনা।
প্রথমেই আসা যাক ভিডিও ফাইল এর এক্সটেনশন এ।
MP4 : সবচেয়ে জনপ্রিয় এক্সটেনশন বলা যায় একে। এই এক্সটেনশন এ মাঝামাঝি আকারের ফাইলে মানসম্মত পিক্সেল বিশিষ্ট ভিডিও ধারণ করে রাখা হয় এবং প্রায় সব ডিভাইস ই এই এক্সটেনশন এর ভিডিও চালাতে পারে।
3GP : জাভা ফোন এর যুগের সবচেয়ে প্রচলিত এক্সটেনশন। ভিডিও ক্লিপ কে সাইজে ছোট করে যেকোন ফোন এ এই ফরম্যাটে ভিডিও চালানো যায় কোন প্রেসার ছাড়াই। MP4 দিয়েও ভিডিও ফোনে চালাতে পারবেন তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফোনে অনেক প্রেসার পড়ে বা ফোন হ্যাং হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তবে স্মার্টফোন এ যেকোন ফরম্যাটেই ভিডিও চালানো সম্ভব। 3GP চায়না অথবা সাধারণ নোকিয়া ফোন গুলোর জন্য ব্যাবহৃত হয়। যদিও এই ফরম্যাট এর ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি খুব খারাপ হয়।
MKV : ভিডিও ফরম্যাট এর মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক ফরম্যাট এটি। ইনকোডার দ্বারা এই ফরম্যাটের ভিডিওর কোয়ালিটির কোন ক্ষতি না করেই সাইজে ছোট করে ফেলা যায়। আবার এই ফরম্যাটে বিশিষ্ট একটা ফিচার হলো ভিডিও ফাইলের সাথেই সাবটাইটেল ফাইল সংযুক্ত করে দেয়া যায়। তাই এই ফরম্যাটে ভিডিও দেখলে কষ্ট করে আর ইন্টারনেট এ সাবটাইটেল খুঁজে বেড়াতে হয়না। তবে সাবটাইটেল সংযুক্ত করা ফাইল গুলো স্মার্ট ফোন এ চালাতে একটু অসুবিধা হয় আরকি।
VOB : বাড়িতে ডিভিডি প্লেয়ার আছে কিন্তু সরাসরি ভিডিও দেখতে পারছেন না? আপনার ভিডিও টিকে VOB ফাইলে কনভার্ট করে নিন। কম্পিউটার এ এই ফাইল চালালে দেখতে পারবেন ভিডিও কোয়ালিটি অনেক খারাপ আসবে কিন্তু এই এক্সটেনশন বিশিষ্ট ফাইল গুলো সাইজে অনেক ছোট হয় আর কম্পিউটার বা ফোনে খুব ভালো কোয়ালিটি তে না আসলেও ডিভিডি প্লেয়ার গুলোতে এই ফাইল গুলোর অনেক স্মুথ আউটপুট আসে।ডিভিডি প্লেয়ার এ অনেক সময় MPEG বা AVI ফরম্যাট ও সাপোর্ট করে কিন্তু প্রায় সময়েই আবার এই ফাইল গুলো লোড হয়না। আর MPEG ফাইল গুলো সাইজে অনেক বিশাল আকৃতির হয় এবং AVI খুব একটা জনপ্রিয় ভিডিও ফাইল ফরম্যাট নয়।
WEBM : স্মার্টফোন আর পিসি ছাড়া এই ফরম্যাট এর গতি নেই। এই ফরম্যাট ইউটিউব অথবা ইন্টারনেট এ অনলাইন স্ট্রিম করার সাইট থেকে ডাউনলোড করা ভিডিও তে দেখা যায়। ইউটিউব থেকে যারা ভিডিও ডাউনলোড করেন তাদের কাছে এই ফরম্যাট নিত্যদিনের ব্যাপার তাই এটা উল্লেখ করা,তাছাড়া এই ফরম্যাটের তেমন কোন বিশেষত্ব নেই বললেই চলে।
ভিডিও ফরম্যাটের মধ্যে এই কয়েকটি ফাইল ই ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও আরো অনেক ফরম্যাট আছে যেগুলো পিএসপি বা ম্যাকবুক এ চালানোর জন্য ব্যাবহৃত হয়,ওসব ফরম্যাটের কাজ অনেক কম হয় কারণ,আপনার যদি পিএসপি বা ম্যাকবুক কেনার সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনার ফাইল কনভার্ট করে ভিডিও চালানোর কোন দরকার ই পরেনা। আপনি ইউটিউবেই ভিডিও দেখার সামর্থ্য রাখবেন আশা করি।
এবার আসবো গানের ফাইল ফরম্যাট এ।
MP3 : সবচেয়ে জনপ্রিয় ফাইল ফরম্যাট। অডিও সিস্টেম এ যেকোন ডিভাইস এই ফরম্যাট এর গান চালাতে পারে। তবে এই ফরম্যাট এর অন্যতম সমস্যা হলো এর সাইজ অনেক বড় হয়। ৪-৫ মিনিটের গান ১০ এম্বি পর্যন্ত যায় এই ফরম্যাট এ। যারা ক্লাউড এ গান আপ্লোড করেন বা নিজের প্লে লিস্ট মানুষের সাথে শেয়ার করেন তাদের জন্য এই ফরম্যাট আদর্শ নয়। তবে নিজের ফোনে রাখলে এই ফরম্যাটে সমস্যার কিছু নেই।
M4A : আমার সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট। চায়না প্রায় ফোন ই এই ফরম্যাট সাপোর্ট করেনা তবে ৬-৭ মিনিটের গান ও এই ফরম্যাট এ ৫ এম্বি এর বেশি সাইজের হয়না। ক্লাউডে আপ্লোড করতে বা কাউকে দিতে কোন সমস্যা হবে না এই ফরম্যাটের গান। সাইজে ছোট এবং একদম ক্লিয়ার প্লেব্যাক এর জন্য এই ফরম্যাট সবচেয়ে ভালো এবং সুবিধাজনক।
OGG/WAV : এই ফরম্যাট রেকর্ড করা ফাইল এ ব্যাবহার করা হয়। মূলত স্মার্টফোন গুলো OGG এবং চায়না ফোন গুলো WAV ফরম্যাট এ রেকর্ড করে থাকে। এই ফর্মাট দুটির সুবিধা হলো এদের সাইজ অত্যন্ত ছোট আকারের হয়ে থাকে। তবে এদের প্লেব্যাক মানসম্মত নয়।
MIDI : গান না,সুর এর জন্য এই ফরম্যাট। পিয়ানো,ড্রাম,ইলেক্ট্রিক গিটার বা যেকোন বাদ্যযন্ত্র এর সুর রেকর্ড করতে এই ফরম্যাট ব্যাবহৃত হয়। ১০-১৫ মিনিটের সুর ১-২ এম্বি তে আটকিয়ে ফেলতে পারবেন এই ফাইল ফরম্যাট এ কোন প্রকার কোয়ালিটি লস ছাড়াই। এছাড়াও পিয়ানো/গিটার শিখতেও এই ফরম্যাটের ফাইল ব্যাবহার করা যায়। যদি পিয়ানো বাজানোর আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে Rubycell এর Pianist App টি নামিয়ে ফেলুন স্মার্টফোন এ আর এই ফর্মাটের ফাইল ইম্পোর্ট করে পিয়ানো শিখতে নেমে পড়ুন। এছাড়াও রিংটোন ও এই ফর্মাট ব্যাবহার করে থাকে।
আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী পর্বে নিয়ে আসবো অন্যান্য ফাইল ফর্মাটের বৈশিষ্ট্য ও কার্যকরিতা।
পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার মন্তব্য থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
source : Tip Top Tips
https://mbasic.facebook.com/Tip-Top-Tips-331809883953350/?_e_pi_=7%2CPAGE_ID10%2C6122756625
No comments:
Post a Comment