(ব্রাকেট এর অপ্রয়োজনীয় ব্যাবহারের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়)
ফোন জিনিস টা আমাদের জীবণের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠেছে। উঠতে-বসতে,খেতে-পড়তে,ঘুমাতে-ঘুম থেকে উঠতে এই স্মার্টফোনের বিকল্প সঙ্গ নেই। কিন্তু আপ্রান চেষ্টার পর ও স্মার্টফোন ডিভলপার রা বর্তমানের এন্ড্রয়েড প্লাটফর্ম কে স্থিতিশীল পর্যায়ে আনতে পারেন নি। তাই বলে কি আইফোন এ ঝাঁপ দেবেন?
“বন্ধু যখন এন্ড্রয়েড লইয়া আমার ফোনের সামনে দিয়া,ফ্রি এপ্লিকেশন ডাউনলোডায়,ফাইট্টা যায়,ওরে বুকটা ফাইট্টা যায়” – গাইতে হবে।
যাই হোক,স্মার্টফোনের কিছু সাধারণ থেকে অসাধারণ সমস্যা এর সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো আজ। রীতিমতো মানুষ যা বলে তা থেকে দেয়ার চেষ্টা করছি।
১. স্মার্টফোন এর চার্জ না থাকে না? (এটা ট্রিক নয়,টিপস দিয়ে শুরু করি,ট্রিক দিয়ে শেষ করবো,সহজ থেকে কঠিন আর কি)
– প্রথমেই বলে রাখা ভালো,আপনার ফোন কি রুটেড? প্রশ্ন টা কিছুটা পেপ্সোডেন্ট এর এড এর মতো। আপনার টুথপেস্ট এ কি লবণ আছে? যাই হোক,রুটেড না থাকলে এখন ই ব্যাবহার করুন পেপ্সোডেন্ট টুথব্রাশ। প্রতিদিন ফোনের স্ক্রিন টা ব্রাশ দিয়ে ঘষবেন।
আচ্ছা এখন আসল কথায় আসি,রুটেড না হলে ‘Kingroot’ নামক একটি অ্যাপ নামিয়ে ফেলুন গুগল থেকে (গুগল প্লে স্টোর এ পাবেন না আসল জিনিস)। ওদের ই অফিসিয়াল সাইট আছে,অন্য সাইট থেকে না নামানোই ভালো।
যাই হোক,নামানোর পর ফোন রুট করবেন।
প্লে স্টোর বা সিকিউরিটি এর প্রায় অ্যাপই এই Kingroot কে বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু এই অ্যাপ যদি বুঝে শুনে ব্যাবহার করতে পারেন,এর মতো সাশ্রয়ী আর কাজে লাগানোর মতো আর একটা অ্যাপ্লিকেশন ও আপনার ফোনে থাকবেনা। যাই হোক, অ্যাপ ইন্সটল করে ফেলার পর ঢুকে দেখুন আপনার সিস্টেম অ্যাপ আনইন্সটল করার জন্য একটা ফাংশন দেয়া আছে এতে।
এখন ২ মিনিট নিজের কলিজার টুকরা ফোন টাকে হাতে নিয়ে সিস্টেমের দশা দেখুন। বেচারা হ্যাংগআউট,জিমেইল এর মতো হাজারটা অব্যবহৃত অ্যাপকে চালিয়ে রাখছে ব্যাকগ্রাউন্ডে আর আপনিও ইচ্ছেমতো দিন কে দিন টাস্ক কেটে দিচ্ছেন আর এটাও বুঝছেন না যে কেটে দেয়ার পর ই ওসব আগাছা আবার জন্মায়।
এবার ছাটাই করুন সব আগাছা কে।
বি.দ্র. : যারা প্রথম প্রথম ব্যাবহার করছেন তাদের জন্য,মেসেজিং বা ক্যালেন্ডার ব্যাবহার করেন না দেখে আবার এসব ছাটাই করতে যাবেন না। এসব ব্যাটারি খোর না। পারলে গুগলের বংশ ছাটাই করুন।
ছাটাই পর্ব শেষ হলে অটো স্টার্ট ফাংশন টির ভেতর থেকে অন্যান্য অ্যাপ এর (যেসব সবসময় কাজে লাগেনা) পারমিশন ছিনিয়ে নিন। আপনার ফোনের সাথে যেসব অ্যাপ এর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে,ফোন অন করার সাথে সাথেই চালু করে দেয় ব্যাটারি টানা,বন্ধ করে দিন সেসব অ্যাপ এর স্টার্টাপ পারমিশন। যদি আপনার ফোনের ব্যাটারির আলামত যাই যাই না হয়ে থাকে,তাহলে কমপক্ষে ২ ঘন্টা ব্যাটারির সময়কাল বাড়বে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
২. গুগল প্লে স্টোর এ কানেকশন ইরর দেখায় ইন্টারনেট থাকা সত্ত্বেও?
– যারা আমার মতো নতুন নতুন ওএস আসার পর ও তাদের ফোন আপগ্রেড করেন নি কিটক্যাট এর ভালোবাসায়,তারা বুকে আসেন। প্লে স্টোর এর সবচেয়ে জনপ্রিয় বাগ দুইটির মধ্যে এটি একটি। (আরেকটি নিন্মে বর্ণনা করবো।) ফোনের ইন্টারনেট কানেকশন ঠিক থাকা সত্ত্বেও ফোন প্লে স্টোর এ টানেনা? মূলত এর দুইটা সমাধান আছে। আমি সমস্যা সমাধান দুটিকে নামকরণ করেছি ১. ধৈর্য্যের পরীক্ষা আর ২. পার্মানেন্ট শর্টকাট। নামকরণের কারণ সহ সমাধান দুটি নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
১. প্রথমতো,এই সমাধানটি করতে রুট লাগেনা। তবে এটা একটা ক্ষনস্থায়ী সমাধান। যদি আপনার খুব আর্জেন্ট প্লে স্টোরে কোন কাজ থাকে তাহলে এটা করে কাজে লাগাবেন আর পরে সময় নিয়ে ২ নম্বর সমাধান টি কাজে লাগাবেন। এই সমস্যা টি কেন হয় সেটা এখন পর্যন্ত বের করতে পারিনি কিন্তু প্লে স্টোর আমার প্রিয় অ্যাপ দেখে এই সমস্যা হতে দেখলেই ঘুতিয়ে ঘুতিয়ে বের করেছি কোনটা দিয়ে কি হয়।
এটা বলে রাখি,ফোন রিস্টোর দেয়া কিন্তু অন্ড্রয়েডের যেকোন সমস্যার ই সমাধান হিসেবে কাজ করে। তবে ফোন রিস্টোর দেয়ার অনুভূতি আর ফোন টাকে যমুনা সেতু থেকে চটকা মেরে ফেলে দেয়ার অনুভূতির মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। তাই আমি এই সমাধান এর নামকরণ ও করিনি এবং এ নিয়ে আলোচনা ও করবো না। যাই হোক,প্রথমত দেখুন আপনার প্লে স্টোর জি-মেইল এর সাথে সংযুক্ত কিনা। যদি না হয় তাহলে প্লে স্টোর সংযুক্ত করুন। কারণ জিমেইল ছাড়া প্লে স্টোর ই চলবে না। আর যদি সংযুক্ত করা থাকে তাহলে যেখানে সংযুক্ত করেছিলেন সেখানে যান। অর্থাৎ সেটিংস (গুগল সেটিংস না) > একাউন্টস > গুগল এ যান। এখানে আপনার যতগুলো একাউন্ট ফোনের সাথে সংযুক্ত করা রয়েছে সবগুলো রিমুভ করুন। এরপর প্লে স্টোর এর ডাটা ক্লিয়ার করে ফেলুন। বাস! এবার আবার আপনার ইমেইল এ লগ ইন করিয়ে গুগল প্লে স্টোর এ গিয়ে ইমেইল এর এগ্রিমেন্ট এক্সেপ্ট করুন,আপনার প্লে স্টোর চলবে। এখন এটা খুব সহজ ও সাধারণ সমাধান লাগতে পারে। আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন এটা তো একটু ঘুতালেই পাওয়া যেতো। এটা দেয়ার কারণ কি? এখন আমি বলবো এটা মূলত দেয়া হয়েছে ২ নং সমাধান এড়িয়ে যাবার জন্য। ২ নং সমাধান টি এতো জটিল ও বড় যে অনেকেই এটা না ও বুঝতে পারেন। তাই যারা করতে চান না কিন্তু এভাবে প্রতিদিন এই সমাধান দিয়ে অস্থায়ীভাবে সমস্যাটাকে এড়িয়েও চলতে চান না তাদের জন্য বলছি,ফোন রুট করা অবস্থায় ১ নং সমাধান ব্যাবহার করে প্লে স্টোর এ ঢুকে দেখুন কাজ হয়েছে কিনা। যদি হয়ে থাকে তাহলে টাইটেনিয়াম ব্যাকআপ নামক একটি অ্যাপ গুগল থেকে নামিয়ে ফেলুন আর প্লে স্টোর এর একটি ডাটা সম্বলিত ব্যাকাপ করে রাখুন। পরবর্তী তে সমস্যা দেখা দিলে ব্যাকাপ এ যাবেন আর রিস্টোর দেবেন। একেবারে সহজ সমাধান।
এর পরবর্তী সমাধান অর্থাৎ দুই নং উপায় টি জটিলতা আর আকার এর উপর বিবেচনা করে পর্ব দুই এ দেয়া হবে। এর সাথে আরো একটি নতুন বাগ নিয়ে আলোচনা করবো আশা করি।
সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। বিষয়টি নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন আশা করি। আমাদের সর্বাত্বক চেষ্টা থাকবে আপনার সমস্যার সমাধান দেয়ার।
No comments:
Post a Comment