মাইক্রোসফট উইন্ডোজের Command Prompt এ ২০০ টিরও বেশি কমান্ড রয়েছে! গ্রাফিকাল উইন্ডোজ ইন্টারফেস বা কোনো সফটওয়্যার ছাড়া সিস্টেমের নির্দিষ্ট টাস্ক বা সমস্যার সমাধান করতে এই কমান্ডগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পোস্টে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড নিয়ে আলোচনা করা হবে।
প্রথমেই আমাদের জানতে হবে Command Prompt কী?
Command Prompt হলো কমান্ড লাইন লিখে উইন্ডোজকে বিভিন্ন টাস্ক দেয়ার একটি এপ্লিকেশন (command line interpreter application) যা বেশিরভাগ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমেই আছে।
বেশিরভাগ কমান্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে scripts এবং batch files ব্যবহার করে উন্নত কার্য সম্পাদন করে এবং উইন্ডোজের বেশকিছু সমস্যার সমাধান করে।
এটি Windows XP এবং এর পরবর্তী উইন্ডোজ ভার্শনে Command Prompt, CMD বা CMD commands নামে এবং windows 98/95, MS-DOS এ DOS commands নামে পরিচিত।
এখন চলুন দেখি কিভাবে Command Prompt চালু করতে হয়一
কম্পিউটার স্ক্রিনের একদম নিচের বাম পাশে উইন্ডোজ লোগোতে মাউসের রাইট ক্লিক করুন বা windows + X চাপুন, সেখান থেকে Command Prompt সিলেক্ট করুন। অথবা windows + R চাপুন এবং run dialogue box এ “cmd” লিখে enter চাপুন। এছাড়া Windows + S চেপে সেখানে “cmd” লিখেও Command Prompt চালু করতে পারেন।
এখন আমরা জানি কিভাবে Command Prompt চালু করতে হয়। তাহলে চলুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডের বিস্তারিত ব্যবহার জেনে নেই 一
ASSOC
আমরা অনেকেই ফাইলের নামের পরে এক্সটেনশন লক্ষ করেছি, যা অপারেটিং সিস্টেমের ফাইলের ধরন সনাক্ত করতে সাহায্য করে। উদাহরণ সরূপঃ .txt , .gif , .cpp ইত্যাদি। এক এক ধরনের ফাইল চালু করতে প্রয়োজন হয় এক এক ধরণের প্রোগ্রাম। মাঝে মাঝে এই এক্সটেনশন দেখে কোন ফাইল কোন ধরনের তা আমরা বুঝতে পারি না। তখনই কাজে আসবে assoc কমান্ডটি।Command Prompt এ এই কমান্ডটি লিখলেই সব ধরণের ফাইল এক্সটেনশনের বিস্তারিত চলে আসবে।
এছড়াও নির্দিষ্ট ফাইল এক্সটেনশনের জন্যও কমান্ডটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ assoc.doc
DRIVERQUERY
ড্রাইভার; পিসিতে ইনস্টল করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফ্টওয়্যারের মধ্যে একটি। একটি পিসিতে অনেকগুলো ড্রাইভার ইনস্টল থাকে। কোনো ড্রাইভার ঠিকমতো configure না থাকলে বা missing থাকলে তা বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই পিসিতে ইনস্টলকৃত ড্রাইভারের তালিকা দেখতে পারলে তো ভালোই হয়। driverquery কমান্ডটি ঠিক সেই কাজটিই করে।
এছাড়া ড্রাইভারের আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য driverquery -v ব্যবহার করা যেতে পারে।
File Compare
দুইটি text file এর মধ্যে পার্থক্য সনাক্ত করতে এই কমান্ডটি ব্যবহার করা হয়। এজন্য লিখতে হবে-
fc /1 “dp1” “dp2”
এখানে dp1 ও dp2 এর জাগায় দুটি text file এর directory path এবং filename লিখতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ fc switch-
/b : শুধুমাত্র বাইনারি আউটপুট তুলনা করে।
/l : শুধুমাত্র ASCII টেক্সট তুলনা করে।
IPconfig
ipconfig কমান্ড কম্পিউটারের IP address সহ বিভিন্ন তথ্য যেমন- default gateway address খুব সহজেই দেখা যায়। command prompt এ ipconfig লিখলেই কম্পিউটার যে সমস্ত নেটওয়ার্ক সংযোগ ব্যবহার করছে তার একটি তালিকা দেখাবে। নেটওয়ার্ক তারের সাথে সংযুক্ত থাকলে ‘Ethernet adapter’ এর নিচে এবং Wi-Fi এর সাথে সংযুক্ত থাকলে ‘Wireless LAN adapter’ এর নিচে দেখুন।
এছাড়া, ipconfig/flushdns লিখে DNS resolver cache flush করতে পারেন।
PING
কোনও ওয়েবসাইট বা অন্যান্য নেটওয়ার্ক সংযোগ সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই সমস্যা সনাক্ত করতে ping কমান্ডটি অনেক কার্যকরী। এর জন্য command prompt এ ping tiptaptips.info (বা যেকোনো ইন্টারনেট সার্ভার যা আপনি পরীক্ষা করতে চান) লিখলে উইন্ডোজ ওই address এ packet পাঠাবে। packet যদি ফিরে আসে তাহলে বুঝা যাবে কম্পিউটার ওই সার্ভারের সাথে যোগযোগ করতে সক্ষম। আর যদি packet ফিরে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে সমস্যাটি কি নেটওয়ার্কের নাকি সার্ভারের তা বুঝতে পারবেন।
এছাড়া এই কমান্ডের মাধ্যমে সার্ভারের গতিও দেখা যায়।
PATHPING
এটি ping কমান্ডের থেকে উন্নত। মূলত কম্পিউটার এবং টেস্টকৃত ডিভাইস বা সার্ভারের মধ্যে একাধিক রাউটার থাকলে pathping কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
TRACERT
tracert কমান্ডটি pathping এর অনুরূপ। এর মাধ্যমে domain বা IP adress ট্রেস করা যায়। এছাড়া কম্পিউটার এবং নির্দিষ্ট address এর মাঝে গমনপথের প্রতিটি ধাপ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
NETSTAT
netstat -an কমান্ডটি কম্পিউটারে open port ও সংশ্লিষ্ট IP address প্রদান করবে এবং port এর অবস্থা জানাবে- listening, established নাকি closed। কম্পিউটারে সংযুক্ত ডিভিসিগুলোর সমস্যা সমাধান করতে বা সিস্টেমে trojan আক্রমণ করলে সেই আক্রান্ত সংযোগ সনাক্ত করতে এই কমান্ডটি অনেক উপকারী।
System File Checker
এটি উইন্ডোজের system file checker টুল। কোনো সিস্টেম ফাইল অনুপস্থিত(missing) বা নষ্ট হয়ে গেলে system file checker তা repair করে। এটি উইন্ডোজের অনেক সিস্টেম সমস্যা সমাধান করতে পারে।
এটি ব্যবহার করতে administrator হিসেবে command prompt চালু করে sfc /scannow লিখতে হবে।
স্ক্যান সম্পন্ন হতে ২০-৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
CIPHER
cipher উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একটি বিল্ট-ইন কমান্ড লাইন টুল যা NTFS ড্রাইভের ডাটা এনক্রিপ্ট বা ডিক্রিপ্ট করতে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও ডিলিট করা কোনো ডাটা অপুনরুদ্ধারযোগ্য করতেও এটি ব্যবহার করা যায়।
কোনো টেক্সট ফাইল এনক্রিপ্ট করার সময় উইন্ডোজ সেই ফাইলের অস্থায়ী ব্যাকআপ ফাইল তৈরী করে যেন এনক্রিপশনের সময় কোনো সমস্যা হলে পুনরুদ্ধার করা যায়।একবার এনক্রিপশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, ব্যাকআপ মুছে ফেলা হয়, কিন্তু ওই ব্যাকআপ যেকোনো Data Recovery Software দিয়ে সহজেই পুনরুদ্ধার করা যায়। ফাইলটি পুনরুদ্ধার অযোগ্য করতে তা overwrite করতে হয়, যা Cipher দিয়ে করা সম্ভব। লিখতে হবে ছোট একটি কমান্ড-
cipher /w:driveletter:\foldername
এখানে,যে drive এ overwrite করতে চান ওই drive এর driveletter এবং নির্দিষ্ট folder এর foldername লিখবেন।
(সম্পূর্ণ drive overwrite করতে “\foldername” লিখতে হবে না।)
কিছু গুরুত্বপূর্ণ cipher switch-
/e : নির্দিষ্ট folder কে এনক্রিপ্ট করে।
/d : নির্দিষ্ট folder কে ডিক্রিপ্ট করে।
(এনক্রিপ্টেড ফোল্ডারে পরবর্তীতে কোনো ফাইল বা ফোল্ডার রাখলে তা এনক্রিপ্ট হয়ে যাবে)
/w PathName : ডিলিট হওয়া ডাটা overwrite করে পুনরুদ্ধার অযোগ্য করতে।
POWERcfg
powercfg একটি শক্তিশালী কমান্ড। এর মাধ্যমে কম্পিউটারের পরিচালনা ট্রেক করে কম্পিউটার কিভাবে শক্তি(energy) ব্যবহার করছে তা দেখা যায়। এর অনেক command list আছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ command list নিম্নরূপ-
শক্তি ব্যবহারের বিস্তারিত বিবরণ পেতে- powercfg /energyকোন ডিভাইস কম্পিউটারকে sleep mood থেকে জাগিয়েছিলো দেখতে- powercfg /lastwakehibernation on করতে powercfg /hibernate on এবং hibernation off করতে powercfg /hibernate off
TASKLIST
এটি task manager এর মতো কম্পিউটারে চলমান সকল টাস্ক বা সফটওয়্যার এর তালিকা প্রদর্শন করে। কিন্তু tasklist কমান্ড অনেক hidden টাস্ক ও দেখায় যা task manager এ দেখা যায় না।
এছাড়া tasklist এর কিছু modifier আছে।
প্রতিটি টাস্কের সার্ভিস দেখতে Tasklist -svcআরও বিস্তারিত দেখতে Tasklist -vটাস্কের সাথে সম্পর্কিত .dll file সনাক্ত করতে Tasklist -m
advanced troubleshooting এর জন্য এই কমান্ডগুলো ব্যবহার করা হয়।
TASKKILL
এই কমান্ডটি আসলে চালু টাস্ক froce stop করে বন্ধ করতে ব্যবহার করা হয়। এই কাজ task manager দিয়ে আরও সহজে করা যায়, তবে কিছু hidden টাস্ক থাকে যা বন্ধ করতে এই কমান্ডটি কার্যকর।এর জন্য লিখতে হবে-
taskkill -im ImageName
ImageName এর স্থলে tasklist এ প্রদর্শিত নাম লিখতে হবে।
আশা করি কমান্ডগুলো সবার উপকারে আসবে। পরবর্তীতে থাকছে CMD এর বিভিন্ন টিপস & ট্রিকস। আমাদের সাথেই থাকুন।
source:- Tip Top Tips
@[331809883953350:]
No comments:
Post a Comment